নতুনদের জন্য ইউটিউব বেসিক ট্রেনিং - পর্ব ১

যারা ইউটিউবে আসতে চাচ্ছেন এবং এখানে কাজ করে ইনকাম করার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য শুরু হয়ে গেলো ইউটিউব কোর্স । এই কোর্সে ইউটিউবে কাজ করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু নিয়ে আলোচনা করা হবে ধাপে ধাপে । আপনাদের সুবিধার জন্য এটাকে পর্ব আকারে পাবলিশ করা হবে যেন ঢাউস সাইজের আর্টিকেল পড়ে ক্লান্ত না হয়ে পরেন । আর বেশি অতিরিক্ত কথা বলবো না, চলুন শুরু করা যাক আমাদের ইউটিউব কোর্স । 





Jumpstart your channel 


Create a channel: আপনি যখন চ্যানেল তৈরি করতে চান তখন সুন্দর একটা নাম দরকার । এমন একটা নাম আপনি খুঁজে নিবেন যা সহজেই সবাই মনে রাখতে পারে । আপনার চারপাশে যারা রয়েছে তাদেরকে বললে সহজেই যেন খুঁজে পায় এবং আপনিও যেন নামটা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তেমন একটা নাম খুঁজবেন । অবশ্যই এমন কোন নাম খুঁজে বের করবেন না, যে নামে আগেই আরও চ্যানেল রয়েছে কিংবা বড় কোন চ্যানেল রয়েছে । যদি নাম কপি করেন তাহলে র‍্যাংকিং এ ঝামেলা হবে । এবং কেউ আপনার চ্যানেলে আসবে না । সবাই ঘুরে ফিরে বড় চ্যানেলে চলে যাবে । এতে করে বড় একটা দর্শক আপনি শুরুতেই হারিয়ে ফেলবেন । 

Be found:  এখন আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে ইউটিউবে দর্শক কিভাবে আপনার ভিডিও খুঁজে পাবে ? যারা সফল হতে চায় তারা প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট দর্শকদের টার্গেট করে ভিডিও বানায় । মানে, তারা ইচ্ছামত ভিডিও নির্মাণ করে না । তাদের টার্গেট থাকে নির্দিষ্ট বয়সীদের জন্য তারা ভিডিও বানাবে । এছাড়াও সঠিকভাবে থাম্বনেইল, ট্যাগ ও আকর্ষণীয় টাইটেল দ্বারা ভিউয়ার সহজে ভিডিও খুঁজে পায় । যদি ভিডিও ভাইরাল হয় তখন আরও বেশি দর্শকের কাছে ভিডিও চলে যায় এবং ইউটিউবার অনেক বেশি ভিউ পেয়ে যায় । 

Keep 'em watching: দর্শক যখন আপনার ভিডিও দেখতে থাকবে এবং পছন্দ করবে তখন তারা যেন আবারো আপনার চ্যানেলে ফিরে আসে সেজন্য নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে এবং আপনার সব ভিডিও প্লেলিস্ট আকারে সাজিয়ে ফেলবেন যেন দর্শক সহজেই আপনার ভিডিও সেখান থেকে খুঁজে পায় । 

Drive Fandom: উপরের তিনটা কাজ সঠিকভাবে করার পরে আপনার চ্যানেলের ফ্যানদের একত্রিত করে ফেলবেন । সেজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের জন্য গ্রুপ, পেজ তৈরি করবেন । এরপর আপনার ভিডিও ডেসক্রিপশনে ইমেইল দিবেন যেন তারা যোগাযোগ করতে পারে । এরপর ফোন নাম্বার দিতে পারেন । এবং এইক্ষেত্রে সময় উল্লেখ করে দিতে পারেন । এতে নির্ধারিত সময়ের পরে কেউ ফোন করবে না । করলেও আপনি রিসিভ করবেন না । কারণ, আপনি যখন রুলস মেনে চলবেন তখন আপনার ফ্যানেরাও আপনাকে অনুসরণ করবে । আপনি যদি সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা সময় দিয়ে রাখেন কিন্তু সন্ধায় কেউ ফোন করলে আপনি রিসিভ করেন তাহলে সবাই ধীরে ধীরে সময়ের বাইরে চলে যাবে । আপনার কোন রুলসই আর কাজ করবে না । তবে কারো সাথেই খারাপ ব্যবহার করবেন না । মুড খারাপ থাকলে কারো রিপ্লাই দিবেন না । কারণ তখন তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়ে যেতে পারে । আপনার ফ্যানেরা অনেক শখ করে আপনাকে নক করবে তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন উপযুক্ত সময়ে এবং সঠিক ব্যক্তির সাথে ঠিকঠাক আচরণ করবেন । এতে আপনার সুনাম ছড়িয়ে পড়বে । আপনার ভিডিও ভালো নাও হতে পারে কিন্তু আপনি মানুষ হিসাবে ভালো, এটাই আপনার চ্যানেলের ব্যাপ্তি ছড়িয়ে দিতে পারে । এভাবে আপনার শক্তিশালী ফ্যানবেজ তৈরি হবে । পরবর্তীতে এদের টার্গেট করে আপনি অন্য কোন বিজনেস দাঁড় করাতে পারবেন যেখানে তারাই হতে পারে আপনার প্রথম ক্রেতা । 

Define your mission and audience

আপনি যখন ইউটিউবার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবেন তখন নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন নিয়মিতভাবে হতে হবে । আপনার ভিডিও কোয়ালিটি ঠিক রাখা, দর্শকদের কেমন মেসেজ দিতে চান, আপনি কি দ্রুত নিজের চ্যানেলের ব্র্যান্ডিং করতে পারবেন কিনা এরকম নানা রকম সমস্যার উদ্ভব হবে । এই সমস্যা থেকে বাঁচতে এবং ইউটিউব নিয়ে কাজ করার আগে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করতে হবে - 

- আপনি কি ধরণের কাজ জানেন ? আপনার কাছে সাফল্যের সঙ্গা কি ? 
- কি কারণে আপনার চ্যানেল সব সময় পড়ে যাচ্ছে ? একই ক্যাটাগরির অন্য ক্রিয়েটরগণ ভালো করছে কিভাবে ? আপনি কি করতে ভালোবাসেন এবং কেন ?
- আপনার দর্শক কারা ?
- আগামী পাঁচ বছরের ভেতর আপনার চ্যানেলকে কেমন দেখতে চান ?
- আপনার প্রিয় ইউটিউবার কারা ? তাদের কোন কাজগুলো আপনার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে ?

এরপর ফ্যানদের সম্পর্কে বুঝতে আপনার জানতে হবে তারা কারা ? আপনার চ্যানেলের সকল পরিবর্তন তারাই নজর রাখে । আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার ভিডিও তাদের ভালো লাগছে এবং তারা এটা দেখতে চায় । আপনার ফ্যানদের কমেন্ট এবং মতামত সবার আগে আপনাকে বিবেচনায় আনতে হবে । এই সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন নিয়ে ভাবুন । যেমন - 

- আপনার ভিডিওতে আপনি কি দিতে চাচ্ছেন ?
- আপনার ভিডিও কি নির্দিষ্ট দর্শক শ্রেণীর কাছে কোন প্রভাব তৈরি করতে করছে ? 


ইউটিউব এমন একটা কমিউনিটি যেখানে আপনি কিছু নিয়ম মেনে আপনার ভিডিও সাড়া দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারেন । তাই এমন কিছু তৈরি করুন যা সামান্য হলেও ভালো প্রভাব ফেলে । তাই আপনি ভিডিও তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় আলাদা করে নিন । যেমন - 

- যখন আপনি ফ্রি থাকবেন এবং একাকী থাকবেন তখন ভিডিওর প্ল্যান করবেন । সর্বদা ফোনের নোট বা পকেটে একটা কাগজ এবং পেন্সিল রাখবেন । হুটহাট করে অনেক কিছু মাথায় আসবে এবং হুট করেই চলে যাবে । ভালো আইডিয়া দ্রুত এসে চলে যায় তাই যখনই ভালো কিছু মাথায় আসবে চট করে নোট করে ফেলুন এতে ভুলে যাবেন না । অন্য কাজের সময় চ্যানেল সংক্রান্ত কোন কিছু করবেন না । একদম ফ্রি হয়ে কাজ করুন । আর যদি এটাই আপনার কাজ হয়ে থাকে তাহলে গুড, চমৎকার প্ল্যানিংগুলি রিসার্চ করুন । সেটা স্ক্রিপ্ট করুন । তারপর ভিডিও বানিয়ে ফেলুন । 

- আপনার চ্যানেল ব্র্যান্ডিং করতে কিছু প্ল্যান করতে হবে । চ্যানেল লোগো, ব্যানার ডিজাইন করতে হবে এবং সুন্দর হলেই কেবল সেটা আপলোড করতে হবে । মনে রাখবেন এগুলো আপনার প্রথম ইম্প্রেশন । এটা যদি ঠিকঠাক হয় তাহলে কাজ অনেকটা এগিয়ে যাবে । 

- ইউটিউব এনালিটিকস, এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক । আপনি যখন কাজের অবসরে থাকবেন তখন এটা মন দিয়ে দেখবেন এবং আগের সাথে বর্তমানের উন্নতি- অবনতির গ্রাফ মিলিয়ে দেখবেন । তাহলেই বুঝতে পারবেন আপনি ভালো কাজ করছেন নাকি খারাপ হচ্ছে । যে যত কথাই বলুক, একমাত্র এই জিনিসটা আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করবে তাই নিয়মিত এটা দেখতে হবে । চ্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এরচেয়ে ভালো কোন অপশন এখনো তৈরি হয় নি । এখানে ভিউস, সাবস্ক্রাইবার, মিনিটস ওয়াচড, কয়টা দেশ থেকে আপনার ভিডিও দেখা হচ্ছে এবং কত মিনিট দেখা হচ্ছে, সেরা ভিডিও কোনটা, ইত্যাদি বিষয় জানতে পারবেন । 

টিপসঃ যেকোনো কাজ করার জন্য আপনাকে দৃঢ় হতে হবে, সৃজনশীল চিন্তা করতে হবে, আপনার ফ্যানদেরকে বিবেচনায় রাখতে হবে, কিছু লক্ষ্য নির্দিষ্ট করতে হবে, সবকিছু নোট করতে হবে, পরবর্তী ধাপে কি করবেন সেগুলো লিপিবন্ধ করতে হবে । 

চলবে......  

No comments

Powered by Blogger.